শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

সুখী হওয়ার পাঁচটি উপায়

হারুন উর রশিদ

‘বিজ্ঞানে এটা প্রমাণ হয়েছে যে সুখী হতে হলে সচেতন প্রচেষ্টার প্রয়োজন,’ বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান এবং কগনিটিভ বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক লরি স্যান্টোস।

তিনি বলেছেন, ‘এটা খুব একটা সহজ কাজ নয়, এজন্যে সময় লাগবে।’ তবে তিনি হয়তো জানেন যে সুখী হতে হলে কি করতে হবে? কারণ তিনি পড়ান ‘মনোবিজ্ঞান ও সুন্দর জীবন’ বিষয়ে। খবর-বিবিসি
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৬ বছরের ইতিহাসে তার ক্লাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়।
ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২,০০। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি রেকর্ড।
ইতিবাচক মনোবিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে এই কোর্সটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক স্যান্টোস। এটা মনোবিজ্ঞানেরই একটি শাখা যেখানে সুখ এবং আচরণগত পরিবর্তনের বিষয়ে পড়ানো হয়।
তিন্তু এসব তত্ত্ব আমরা কিভাবে আমাদের প্রতিদিনের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারবো?
‘সুখী হওয়া বিষয়টি এমন নয় যে এটা আপনা আপনি হয়ে যায়। সুখী হওয়ার জন্যে আপনাকে এটা চর্চ্চা করতে হবে,’ বলেন অধ্যাপক স্যান্টোস, ‘এটা অনেকটা ভালো সঙ্গীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠার মতোই, সাফল্যের জন্যে তাদেরকে যেমন চর্চ্চা করতে হয় সুখী হওয়ার ব্যাাপরেও আপনাকে সেটা করতে হবে।’
কিভাবে সুখী হতে হবে তার কিছু কলাকৌশল তিনি শিক্ষার্থীদের শেখান সপ্তাহে দুদিন।
আপনি সুখী হতে চান কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আপনি তো আর ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছেন না? এখান তার দেওয়া পাঁচটি টিপস তুলে ধরা হলো। চর্চ্চা করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
১. কৃতজ্ঞতার একটি তালিকা তৈরি করুন
অধ্যাপক স্যান্টোস তার শিক্ষার্থীদের বলেন, প্রত্যেক রাতে তারা যাদের কাছে বা যেসব জিনিসের কাছে কৃতজ্ঞ তার একটি তালিকা তৈরি করতে।
‘এটা শুনতে খুব সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু আমরা দেখেছি যেসব শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে এটা চর্চ্চা করেন তাদের সুখী মনে হয়,’ বলেন অধ্যাপক স্যান্টোস।
২. আরো বেশি করে ও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে চেষ্টা করুন
এই কাজটা করা সবচেয়ে সহজ বলে মনে হয় কিন্তু আসলে এই কাজটা করা খুব কঠিন, বলেন তিনি।
এখানে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, প্রতি রাতে আট ঘন্টা করে ঘুমানো। এবং এই কাজটা করতে হবে এক সপ্তাহ ধরে।
অধ্যাপক স্যান্টোস বলেন, ‘আমরা সবাই জানি যে বেশি ঘুমাতে পারলে এবং নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারলে বিষণ্নতায় ভোগার সম্ভাবনা কম থাকে। এর ফলে ইতিবাচক মনোভাবও তৈরি হয়।’
৩. ধ্যান করুন
আপনার কাজ হবে প্রত্যেকদিন ১০ মিনিট করে মেডিটেট বা ধ্যান করা।
অধ্যাপক স্যান্টোস বলেন, তিনি যখন ছাত্রী ছিলেন তখন তিনি নিয়মিত ধ্যান করতেন এবং দেখেছেন সেটা করলে মন ভালো থাকে।
এখন তিনি একজন অধ্যাপক, এখন তিনি তার শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছেন কিভাবে ধ্যান করতে হয়। তিনি বলেন, এধরনের কাজে পূর্ন মনোযোগ দিতে হয় যা মানুষকে সুখী হতে সাহায্য করতে পারে।
৪. পরিবার ও বন্ধুদের সাথে আরো সময় কাটান
অধ্যাপক স্যান্টোস বলেছেন, গবেষণায় পরিষ্কার একটি বিষয় দেখা গেছে- পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটালে আপনি সুখী হবেন।
আপনার যদি ভালো বন্ধুত্ব থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগ থাকে এবং তাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ হয় তখন তারা উল্লেখযোগ্য রকমের ভালো বোধ করেন।
এজন্যে যে খুব বেশি কিছু করতে হবে তা নয়, স্যান্টোস বলেন, "শুধু এটা নিশ্চিত করুন যে আপনি এই সময়ে বেঁচে আছে, মনে করুন যে আপনারা একসাথে বর্তমান সময় কাটাচ্ছেন এবং আপনি কিভাবে আপনার সময় কাটাচ্ছেন সেবিষয়ে একটু সচেতন থাকুন।"
তিনি বলেন, আপনার সুখী হওয়ার জন্যে সময় সম্পর্কে আপনার ধারণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
‘আমাদের কতো অর্থ আছে সেটা দিয়ে আমরা প্রায়শই আমাদের সম্পদের হিসাব করি। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পদ হচ্ছে আসলে আমাদের হাতে কতো সময় আছে সেটার সাথে সম্পর্কিত,’ বলেন তিনি।
৫. সোশাল মিডিয়ায় যোগাযোগের পরিবর্তে বাস্তবে এই যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন
অধ্যাপক স্যান্টোস মনে করেন, সোশাল মিডিয়া থেকে সুখের বিষয়ে মিথ্যা যেসব ধারণা পাওয়া যায় সেসবে ভেসে যাওয়া উচিত নয়।
‘সবশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ইন্সটাগ্রামের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যম ব্যবহার করেন তারা, যারা এটা খুব বেশি ব্যবহার করেন না তাদের চাইতে কম সুখী,’ বলেন তিনি।
তো, এখন তো সব জানা হয়ে গেলো।
আপনি যদি সত্যিই জীবনে সুখী হতে চান, তাহলে কৃতজ্ঞ হতে শুরু করুন, পরিবারের সাথে আরো বেশি সময় কাটান, বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করুন, দিনের একটা সময়ে কিছুক্ষণের জন্যে নিজেকে সবকিছু থেকে সরিয়ে ধ্যানে মগ্ন হউন, সোশাল মিডিয়া থেকে দূরে সরে এসে আরো একট বেশি ঘুমাতে চেষ্টা করুন।
ইয়েলের শিক্ষার্থীদের জন্যে যদি এটা কাজ করে, তাহলে এসব পরামর্শ আপনার ক্ষেত্রেও নিশ্চয় কাজ করবে।
colected

শনিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৮

যিশু ঈশ্বরের পুত্র এবং তিনিই ঈশ্বর-এই ধারণা আমাকে সন্তুষ্ট করেনি’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
 আমি ২০১৭ সালের অক্টোবরে ইসলামে ধর্মান্তরিত হই। আমি ক্যাথলিক হিসেবে বড় হয়েছি এবং আমি ছিলাম একজন গোঁড়া ক্যাথলিক। আমি খ্রিস্টধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়ার মাধ্যমে এ বিষয়ে শিক্ষা দিতাম এবং চার্চে খুবই সক্রিয় ছিলাম।
এই সময়ে আমার জীবন সম্পর্কে আমার মনে নানা প্রশ্নের জন্ম নিতে শুরু করে এবং আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেতে চার্চের শরণাপন্ন হই এবং এই কারণে আমি সেখানে অনেকের প্রতিরোধের সম্মুখীন হই।
চার্চ থেকে বাধার সম্মুখীন হওয়ায় আমি কিছু দিন সময় নিয়ে বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে জানার সিদ্ধান্ত নেই। আমি ইহুদি ধর্ম, হিন্দুধর্ম, তাওবাদ, জৈন ধর্ম এবং অবশেষে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা করি।
ইসলাম গ্রহণ করার পর আমার জীবনে ভিন্নতা আসে। এ পর্যন্ত আমার জীবনে পাওয়া সবচেয়ে সুন্দর জিনিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আমার ইসলাম গ্রহণ। একই সঙ্গে এটি আমার জন্য তার নিজের ‘কষ্টের ন্যায্য পাওনা’ নিয়ে এসেছে। আমার পরিবার ইসলাম গ্রহণ করেনি। তাই তারা আমার সঙ্গে কথা বলেন না এবং ফলস্বরূপ, তারা আমার মেয়েকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে।
চাকরি হারিয়ে আমাকে কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। অর্থের অভাবে আমাকে আমার কলেজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। আমি ছিলাম কলেজের সেরা ছাত্রীদের মধ্যে একজন।
জীবনে কোনো কিছুই স্থিতিশীল নয়। আপনার অনেক টাকা থাকতে পারে, আপনার কাজ থাকতে পারে, আপনার পারিবার থাকতে পারে, আপনার অনেক কিছুই থাকতে পারে এবং এগুলো একসময় চলেও যেতে পারে। কিন্তু ধর্ম সবসময়ই স্থায়ী একটি জিনিস যা আপনার কাছে আছে। সুতরাং, আপনার জীবনে কোনো কষ্ট বা অসুবিধা নেমে আসলে আপনার উচিৎ হবে তাৎক্ষণিক আপনার ঈশ্বরের কাছে যাওয়া।
প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য চার্চে গেলাম এবং বলা হলো যে, ‘ঈশ্বর এভাবেই বলেছেন এবং তা নিয়ে আমাদের এই প্রশ্ন করা উচিত নয়’। এটা এমন কিছু যা আসলেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি আমার উত্তর প্রয়োজন হয়, তাহলে আমি এর জন্য কোথায় যাব?
মূল দ্বন্দ্ব হচ্ছে যে আপনি ‘ট্রিনিটি’তে বিশ্বাস করেন (খ্রিস্ট ধর্মে এক ঈশ্বর হিসাবে: পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মাকে ট্রিনিটি বলে) এবং যিশু ঈশ্বরের পুত্র এবং তিনিই হচ্ছেন ঈশ্বর। আপনি যখন বিষয়টি একটু গভীরভাবে চিন্তা করবেন, তখন আপনার কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এটি আসলেই কোনো অর্থ তৈরি করে না।
ইসলাম সম্পর্কে দীর্ঘ সময় নিয়ে আমি অধ্যয়ন করেছি। ইসলাম সম্পর্কে আমার ভিতরেও অনেক ভুল ধারণা ছিল এবং এক পর্যায়ে আমি মুসলমানদেরকে ঘৃণা করতাম। আমি মনে করতাম যে সকল মুসলমানদের মরে যাওয়া উচিৎ এবং মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকা উচিৎ নয়, তাদেরকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো দরকার। ইসলাম নিয়ে আমার মতো এই ধারণাটি আমেরিকায় খুবই সাধারণ একটি ধারণা। কিন্তু এটি ছিল আমার নিজের অজ্ঞতা।
আমি প্রায়ই একটি উদ্ধৃতি দিয়ে থাকি আর তা হচ্ছে, ‘সত্যের পথের জন্য ভয় পাওয়া উচিৎ নয়’। এটি এমন কিছু জিনিস যা খুবই শক্তিশালী। যদি আমার কোনো পরিবার না থাকে, যদি আমার কোনো বন্ধু থাকে না, যদি আমার সবচেয়ে বড় বাড়ি থাকে কিংবা কোনো বাড়ি না থাকে, যদি আমার কাছে বিশ্বের সব টাকা থাকে কিংবা কোনো টাকা না থাকে ... এর সবই ঠিক আছে কারণ আমার কাছে আল্লাহ রয়েছেন।
আল্লাহর সঙ্গে আমার সম্পর্ক এবং তার সান্নিধ্যে আসা নিয়ে আমি চিন্তা করতে পারি এবং ইনশাল্লাহ, আমি অবশ্যই জান্নাতে তাকে দেখতে পাব।
https://www.youtube.com/watch?v=jhMpDLbO1Go#action=share
অ্যাবাউট ইসলাম অবলম্বনে

বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৭

ইসলাম কবি ও কবিতা এবং সাহিত্যচর্চা

ইসলাম মানবতার কল্যাণে নিবেদিত একটি পূর্ণাঙ্গ ও ভারসাম্যমূলক জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর সার্বিক বিষয়ে ইসলাম চমৎকার দিকনির্দেশনা দিয়েছে। মানব সভ্যতার রূপায়ণে কবি ও কবিতা এক অবিচ্ছেদ অংশ। কবি ও কবিতা কালের মহান এক সাক্ষী। মানব মনন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।
ইসলামের দৃষ্টিতে কবিতা দু’ধরনের- একটি সত্য ও সুন্দরের পথপ্রদর্শক অপরটি মানব সভ্যাতার জন্য ধ্বংসাত্মক, অকল্যাণকর, কুরুচিপূর্ণ বিভ্রান্ত চিন্তার ধারক। ইসলাম একদিকে যেমন কল্যাণকর সাহিত্যের সৃষ্টিতে উৎসাহ ও প্রেরণা দিয়েছে ঠিক তেমনি সভ্যতার জন্য ক্ষতিকারক ও অশ্লীল সাহিত্য তৈরিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। পবিত্র কুরআনুল কারীমে কবিদের নামে সুনিপুণ বর্ণনা সমৃদ্ধ ‘আশ-শুয়ারা’ নামক পূর্ণাঙ্গ একটি সূরা রয়েছে। উক্ত সূরায় আল্লাহ বলেন:- এবং কবিদের যারা অনুসরণ করে তারা বিভ্রান্ত। আপনি কি দেখেন না যে তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং এমন কথা বলে যা তারা করে না। তবে তাদের কথা ভিন্ন যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে এবং অত্যাচারিত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে। অত্যাচারীরা অচিরেই জানিবে কোন স্থানে তারা ফিরে আসবে। (সূরা-আশশুয়ারা, আয়াত ২২৪-২২৭)
এই আয়াত নাযিল হওয়ার পর হযরত আব্দল্লাহ বিন রাওয়াহা, হাসসান বিন সাবিত, কা’ব ইবনে মালিক প্রমুখ সাহাবী কবি কাঁদতে কাঁদতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খেদমতে হাজির হন এবং আরজ করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তা’য়ালা এই আয়াত নাযিল করেছেন। আমরাও তো কবিতা রচনা করি, এখন আমাদের উপায় কী? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আয়াতের শেষাংশ পাঠ কর। এ আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, তোমাদের কবিতা যেন অনর্থক ও ভ্রান্ত উদ্দেশ্যে প্রণোদিত না হয়। কাজেই তোমরা আয়াতের শেষাংশে উল্লিখিত কবিদের শামিল। (ফতহুল বারী)
আলোচ্য আয়াতের একদিকে বিপথগামী মুশরিক কবিদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং অপরদিকে তুলনামূলক পর্যালোচনার মাধ্যমে সত্য ও সুন্দরের পতাকাবাহী ঈমানদার কবিদের শ্রেষ্ঠত্ব নিরুপণ করে তাদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে। যারা কবি তারা প্রাকৃতিকভাবেই কিছুটা ভাবুক, কল্পনাপ্রবণ ও আবেগী। এটা তাদের স্বভাবধর্ম। এ কল্পনাপ্রবণ ও আবেগী না হলে কাব্য সৃষ্টি করা যায় না। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে কবিদের প্রতি বিশেষ এক নেয়ামত। যে কারণে সাধারণ মানুষ যা পারে না তারা পারেন, আর পারেন বলেই তারা কবি।
কবিদের এ ভাবের জগৎ থেকে, কল্পনাপ্রবণতা থেকে দূরে রাখা আল্লাহর ইচ্ছা নয়। তবে তারা যেন এ ভাবের জগতে বিচরণ করতে গিয়ে বিপথগামী না হয় এ জন্য আল্লাহ্ তা’য়ালা কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন: ১। একজন কবিকে ঈমানদার হতে হবে। ২। ঈমান আনার সাথে সাথে অসৎ কর্ম বর্জন করে সত্য ও সুন্দরের অনুসারী হতে হবে। ৩। এ ভাবপ্রবণতা ও আবেগী বিচরণ যাতে তাকে সৎ পথ থেকে বিচ্যুত করতে না পারে সে জন্য আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে সদা সর্বদা তাঁর সাহায্য চাইতে হবে। ৪। আর যখনি মানবতা বিপন্ন হবে, নিপীড়িত, নির্যাতিত হবে তখনি কবি তার সর্ব শক্তি নিয়োগ করে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করবেন। মানুষকে তার প্রাপ্য অধিকার সচেতন করে তোলার জন্য, নিপীড়ন ও নির্যাতনের ব্যপারে জনগণকে একত্র করার জন্য, কিসে এবং কিভাবে মানবতা বিপন্ন হচ্ছে তা স্পষ্ট করার জন্য সভ্যতার স্বপক্ষে বিপ্লবের বাণী উচ্চকিত করার প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে কবিদের।
কবি ও কবিতার এক উর্বর জনপদে জন্মগ্রহণ করে ছিলেন রাসূলে আরাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। নবুয়াত প্রাপ্তির আগেই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মধ্যে আরবী ভাষা ও সাহিত্যর উপর একটি অসাধারণ দখল এসে গিয়েছিল প্রকৃতিগত ভাবে একজন আরব হবার কারণে। এছাড়া কবি ও কবিতার প্রতি তার একটি স্বভাবসুলভ আগ্রহ ও কৌতূহল ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে যেমন কবিতা শুনতে ভালবাসতেন ঠিক তেমনি অন্যদের ও তিনি কবিতার প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্যে সচেষ্ট ছিলেন। তিনি বলেছেন ‘যে দু’টো মনোরম আবরণে আল্লাহতা’য়ালা বিশ্বকে সাজিয়ে থাকেন, কবিতা তার একটি।’ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে কোন কোন কবিতায় রয়েছে প্রকৃতি জ্ঞানের কথা।’ তিনি সাহাবীদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তনদেরকে কবিতা শেখাও, এতে তার কথা মিষ্টি ও সুরেলা হবে।’ হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) আরো বর্ণনা করেন- ‘মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন- তোমরা কাফির, মুশরিকদের নিন্দা করে কাব্য লড়াইয়ে নেমে পড়। তীরের ফলার চেয়েও তা তাদেরকে বেশী আহত করবে।’  ইবনে রাওয়াহাকে পাঠানো হল। সম্পূর্ণ মুগ্ধ হতে পারলেন না নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। কা’ব বিন মালিককেও পাঠানো হলো। অবশেষে যখন হাস্সান এলেন, তিনি বললেন, ‘সবশেষে তোমরা ওকে পাঠালে? ও তো লেজের আঘাতে সংহারকারী তেজোদীপ্ত সিংহ শাবক।’ কথা শুনে হাস্সান (রাঃ) আনন্দে জিভ নাড়তে নাড়তে বললেন, ‘সেই মহান সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্যবাণী সহকারে পাঠিয়েছেন। এ জিভ দিয়ে তাদের চামড়া ছুলে ফেলার মত গাত্রদাহ সৃষ্টি করেই ছাড়ব।’
এ দিন থেকেই আনসারদের মধ্যে তিনজন ইসলামী কবি হাস্সান বিন সাবিত, কা’ব বিন মালিক এবং আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা কাফিরদের বিরুদ্ধে কাব্য লড়াইয়ে নেমে পড়লেন। একবার রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীর্ঘ সফরে বের হয়েছেন। জনমানবহীন প্রান্তরে মরুপথে উটের পিঠে অবস্থান করছেন। রাতও হয়েছে বেশ, বললেন, হাস্সান কোথায়?’ হযরত হাস্সান (রাঃ) এগিয়ে এসে বললেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ এই তো আমি।’ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আমাদের কিছু “হুদা” শোনাও তো? শুরু করলেন কবি। ওদিকে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মন দিয়ে শুনছেন এবং উট চলছে অধিকতর ক্ষিপ্রতায়। উটের দ্রুত চলার কারণে মনে হচ্ছে হাওদা যেন পিছন দিকে ভেঙে পড়ে যাবে। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাস্সানকে থামতে বলে মন্তব্য করলেন, ‘কবিতাকে এ জন্যই বলা হয় বিদ্যুতের চেয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন এবং এর আঘাত শেলের আঘাতের চেয়েও ক্ষিপ্র ও ভয়ানক।’
রাসূল (সাঃ)-এর উৎসাহ ও প্রেরণায় সাহাবীদের মধ্যে যাদের কাব্যচর্চার প্রতিভা ছিল তারা প্রায় সকলেই কাব্যচর্চা করতেন। সাহাবী কবিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন- হাস্সান বিন সাবিত (রাঃ), কা’ব বিন মালিক (রাঃ), আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রাঃ), আলী ইবনে আবু তালিব, আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ), উমর ফারুক (রাঃ), লবীদ বিন রাবিয়াহ (রাঃ), কাৎব ইবনে যুহাযের (রাঃ), আব্বাস বিন মিরদাস (রাঃ), যুহায়ের বিন জুনাব (রাঃ), সুহায়েম (রাঃ) ও আবু লায়লা (রাঃ) প্রমুখ।
রাসূলে আরাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবী কবিদের মধ্যে থেকে কবি হাস্সান বিন সাবিতকে সভাকবির মর্যাদা দিয়েছিলেন। তাকে বলা হতো শায়েরুর রাসূল বা রাসূলের কবি। হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায় কবি হাস্সান বিন সাবিত কবিতা আবৃত্তি শুরু করলে কবিকে উৎসাহিত করার জন্য কখনো কখনো নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সবাইকে শুনিয়ে বলতেন, ‘হাস্সানের জিব যতদিন রাসূলের পক্ষ হয়ে কবিতার বাণী শুনিয়ে যাবে, ততদিন তার সাথে জিব্রাইল (আলাইহিস সালাম) থাকবেন।’ কবিতা লেখার পুরস্কার হিসাবে কবি হাস্সান বিন সাবিত (রাঃ) জীবিত অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন। হাস্সান বিন সাবিতের কবিতা শুনে রাসূলে আরাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘হে হাস্সান, আল্লাহ কাছ থেকে তোমার জন্য পুরস্কার রয়েছে জান্নাত।’
কাব্যে অশ্লীলতা বর্জনের ব্যাপারে আল্লাহ নবীর কঠোর নির্দেশ ছিল। তিনি বলেছেন ‘ইসলাম গ্রহণের পরও যে অশ্লীল কবিতা ছাড়তে পারলো না, সে যেন তার জিবটাই নষ্ট করে ফেলল।’ রাসূল মাকবুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেন, ‘কারো পেট বা হৃদয় যদি পুঁজপূর্ণ হয়ে পঁচে যায়, তবুও সেই পেট বা হৃদয় অশ্লীল কবিতার চেয়ে উত্তম।’ প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে একবার কবিদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আলোচনাক্রমে জাহেলী যুগের অশ্লীল কবিতার জনক ইমরাউল কায়েসের প্রসঙ্গ এলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে বললেন, ‘দুনিয়ায় তিনি খ্যাতনামা হলেও আখিরাতে তার নাম নেবার কেউ থাকবে না। কবিদের যে বাহিনী জাহান্নামের দিকে যাবে সে থাকবে তার পতাকাবাহী।’
কবি ও কবিতা সর্ম্পকে রাসূলে আরবী (সাঃ) এর মনোমুগ্ধকর চিত্তাকর্ষক, সুনিপুণ মূল্যায়ন আজকের শ্রেষ্ঠ কাব্য সমালোচকদের মন্তব্যকেও হার মানায়। তিনি বলেছেনÑ ‘নিশ্চইয় কবিতা হচ্ছে সুসংবদ্ধ কথামালা, কাজেই যে কবিতা সত্য আশ্রিত সে কবিতা সুন্দর। আর যে কবিতা সত্য বিবর্জিত সে কবিতার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই।  উট থামাতে পারে তার সুকরুণ ক্রন্দন। কিন্তু আরবরা থামাতে পারে না তাদের কবিতার সুর। নিশ্চয়ই কবিতা বিদ্যুতের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং তীরের ফলার চেয়েও ক্ষিপ্র ও ভয়ানক। আরবদের সুসংবদ্ধ কথা হলো তাদের কবিতা। কবিতার ভাষায় কিছু চাইলে তারা মন ভরে দান করে। তাদের ক্রোধের আগুন নিভিয়ে ফেলে কাব্যের অন্তঃসলিল প্রবাহ। সাহিত্যের আসরে কবিতাই হলো তাদের মনকাড়া শ্রেষ্ঠ উপহার।’

বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭

যেখানে জীবন বিক্রি হয় নিলামে !

নিলামে হীরার আংটি, পুরনো ঘড়ি, দুর্লভ শিল্পকর্মসহ কত কিছুই না বিক্রি হয়। কিন্তু নিলামে যে মানুষ বিক্রি হয়- এমন খবর শুনলে হতবাক হতে হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে।
বুধবার একটি ভিডিও সিএনএন প্রকাশ করা হয়েছে যাতে দেখা যায়, নিলাম পরিচালনাকারী ৮০০, ৯০০, ১০০০, ১১০০ হাঁকছেন। দুই জন মানুষকে বিক্রি করতেই এই নিলাম ডাকা।
সেই দুই জনের পরিচয় এখনো বের করতে পারেনি সিএনএন। নাইজেরিয়ার এক ব্যক্তি ফোনে ভিডিওটি ধারণ করেন। নিলামকারী  ‘বড় এবং শক্তিশালী যুবকদের’ একজনকে তার কাছে বিক্রিও করতে চেয়েছিল।
লিবিয়াতে চলছে এই নিলাম। সিএনএন বিক্রি হওয়া দুই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত এবং কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না।

মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বইমেলায় কাজের সুযোগ

ফেব্রুয়ারির বইমেলা শুধু নতুন বইয়ের আনন্দই নিয়ে আসে না, অনেকের জন্য তা খণ্ডকালীন কাজের সুযোগের উপলক্ষও। আর বইমেলায় কাজ করা যেমন আনন্দের, তেমনি এটি বাড়তি রোজগারের সুযোগও। এখানে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের মতে এটি সব মিলিয়ে বেশ ভালো লাগার অভিজ্ঞতা।
এবারের একুশে বইমেলায় প্রথমবারের মতো কাজ করতে এসেছেন আলহাজ মকবুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. রায়হান। তিনি বলেন, এক পরিচিত বড় ভাইয়ের মাধ্যমে তিনি এবার অনন্যা প্রকাশনীতে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। দিনের বড় একটি সময় নতুন বইয়ের সঙ্গে থাকতে খারাপ লাগছে না বলেও জানালেন তিনি।
রায়হানের মতো এমন কয়েক শ শিক্ষার্থী এবারের বইমেলায় খণ্ডকালীন কাজ করছেন। এ বছর বিভিন্ন প্রকাশনীর ৬৫১টি দোকান নিয়ে বসেছে বইমেলা। মেলায় প্রকাশকেরা নিজস্ব কর্মচারীর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ করে দেন। এতে তাঁদের যেমন প্রয়োজন মেটে, শিক্ষার্থীদের কিছুটা বাড়তি আয়ের সংস্থান হয়।
বইমেলার প্রথম দুই দিনে প্রথমা, শিখা, অন্বেষা, আগামী, অন্যপ্রকাশ, কাকলি, শিখা প্রকাশনীসহ বেশ কয়েকটি প্রকাশনীর দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দোকানভেদে দুই থেকে আটজন পর্যন্ত শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্যাভিলিয়নে কাজ করছেন। ছুটির দিনগুলোতে ভিড় বেশি হবে বলে অনেক প্রকাশনীর মালিকেরা আরও দু-একজন বাড়তি লোকের ব্যবস্থাও করেছেন বলে জানালেন।
বইমেলায় বিভিন্ন স্টলে কাজ করেন এমন একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বইমেলায় কাজ তাঁদের নতুন বইয়ের কাছাকাছি থাকার সুযোগ করে দেয়। আবার লেখক-পাঠকদের সঙ্গে যোগাযোগও আনন্দের। আর বাড়তি আয়ের ব্যাপারটি তো রয়েছেই।
বইমেলায় যাঁরা খণ্ডকালীন কাজ করেন, তাঁরা সাধারণত বিভিন্নভাবে কাজের সুযোগ পান। কেউ যেমন পরিচিত বন্ধু, বড় ভাই-আপুর মাধ্যমে কাজ পান। অনেকে আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে মেলায় কাজ পেয়ে যান। শিখা প্রকাশনীতে খণ্ডকালীন কাজ করতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. বাকি বিল্লাহ যেমন কাজ পেয়েছেন বিভাগের লেখক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে। আর ইডেন মহিলা কলেজের শায়লা পারভীন এর আগে বইমেলায় কাজ করেছেন, এমন এক বড় আপুর মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন। তিনি এবার আগামী প্রকাশনীতে কাজ করছেন। শায়লা বললেন, ক্লাসের ফাঁকে বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা, আর ছুটির দিনে সারা দিন বইমেলায় কাজ করতে তাঁর তেমন কোনো অসুবিধা হয় না। আবার বইমেলার কাজের সুযোগে হাজার ক্রেতার সঙ্গে কথা বলা এবং কাজের এই অভিজ্ঞতা তাঁর পেশাগত দক্ষতা বাড়াবে বলেও জানালেন তিনি।
বইমেলায় সাধারণত দুইভাবে কাজ করা যায়। কেউ মেলায় প্রতিদিনের হিসাবে কাজ করেন। আবার অনেকে শুধু ছুটির দিনগুলোতে কাজ করেন। সে জন্য কাজের সম্মানী দুই রকমের হয়। মেলায় সাধারণত বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা, আর ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। যাঁরা মাসিক ভিত্তিতে কাজ করেন, তাঁরা গড়ে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত পান। আবার শুধু ছুটির দিনগুলোতে কাজ করলে দুই থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়।
তবে শিক্ষার্থীদের কাছে মেলায় কাজ করা শুধু আয়ের উপলক্ষ নয়, আনন্দের ব্যাপারও। ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী নিসা মাহবুব যেমন বললেন, ‘এখানে এসে লেখক-পাঠকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে, নতুন বই, বিষয় সম্পর্কে জানতে পারছি। সেটিই বড় পাওয়া।’ আর মাস শেষে আয়ের ব্যাপারটিকে বললেন বাড়তি পাওয়া। সব মিলিয়ে এটি তাঁর জন্য মজার অভিজ্ঞতা বলেই জানালেন তিনি।
মেলায় খণ্ডকালীন কাজ নিয়ে কথা হয় শিখা প্রকাশনীর দোকান ব্যবস্থাপক ইমরান হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাধারণত তাঁদের সঙ্গে পরিচিতদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হয়। পরে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সাবলীলভাবে কথা বলতে পারে এবং চটপটে এমন শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, বইমেলায় কাজ করে অনেকে প্রকাশনীতে স্থায়ীভাবে কাজের সুযোগও পেয়ে যান।